কয়েক দফা পেছানোর পর অবশেষে চালু হচ্ছে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার তিনটি ট্রেনই। করোনার একেবারে শুরুর দিকে ২০২০ সালের ১৫ই মার্চ বন্ধ হয়ে যায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চলাচলকারী মৈত্রী এক্সপ্রেস ও বন্ধন এক্সপ্রেস। এর মধ্যে করোনার প্রকোপ কিছুটা কমার পর ২০২১ সালের ২৭ই মার্চ উদ্বোধন হয় ঢাকা-শিলিগুড়ি-ঢাকা রুটে মিতালী এক্সপ্রেস। তবে উদ্বোধন হলেও যাত্রী নিয়ে একবারও চলাচল করেনি তৃতীয় ট্রেনটি।
এ নিয়ে দুদেশের মধ্যে কয়েকদফা চিঠি চালাচালি করে কয়েকবার তারিখ ঠিক করেও চালু হয়নি ট্রেনগুলো। এর আগে পর্যটক ভিসা শুধুমাত্র বাই এয়ার থাকার কারণে চালু করা যায়নি মৈত্রী ও বন্ধন এক্সপ্রেস। আবার হলদিবাড়ি হয়ে চালু হওয়া মিতালী এক্সপ্রেস চালুর ক্ষেত্রে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় ইমিগ্রেশন। বর্তমানে মৈত্রী এক্সপ্রেসের ক্ষেত্রে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে বাংলাদেশ অংশের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হয় আর ভারতের অংশে কলকাতা স্টেশন (চিৎপুরে) ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হয়। অপরদিকে বন্ধন এক্সপ্রেসের ইমিগ্রেমন শেষ করা হয় বেনাপোল সীমান্তে, ভারতের অংশে যথারীতি কলকাতা স্টেশনে।কিন্তু শিলিগুড়িতে এধরণের সুবিধা না থাকায় ভারত সরকারকে শিলিগুড়ির নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে নতুন করে ইমিগ্রেশন সুবিধা তৈরী ও জনবল তৈরী করতে হয়। যে কারণে বাংলাদেশের প্রস্তুতি থাকলেও এনজেপি স্টেশন প্রস্তুত না হওয়া পর্যন্ত চালু করা যায়নি মিতালী এক্সপ্রেস। বাংলাদেশের রেলমন্ত্রীর ভারত সফরকে সামনে রেখে আগামী পহেলা জুন ২০২২ থেকে চালু হবে মিতালী এক্সপ্রেস। অপরদিকে ২৯ই মে ২০২২ থেকে আগের নিয়মেই যথারীতি চলবে মৈত্রী ও বন্ধন এক্সপ্রেস।
ঢাকা থেকে কলকাতা রুটে সরাসরি চলার জন্য বাই রেইল গেদে হয়ে ভিসা দেয়া হচ্ছিলো এপ্রিলের ২৪ তারিখ থেকে। ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা রুটে মৈত্রী এক্সপ্রেস সপ্তাহে পাঁচদিন চলবে। ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে সকাল ৮:১৫ মিনিটে ছেড়ে যাবে এ ট্রেন। অপরদিকে কলকাতা থেকে ছাড়বে সকাল ৭:১০ মিনিটে। সাপ্তাহিক বন্ধ থাকবে বৃহস্পতিবার। ঢাকা থেকে প্রতি শুক্র, শনি, রবি, মঙ্গল ও বুধবারে যাবে অপরদিকে কলকাতা থেকে শুক্র, শনি, সোম, মঙ্গল ও বুধবারে ঢাকায় আসবে। ট্রেনটির ভাড়া এসি চেয়ার ২,৫০০ টাকা এবং এসি সিট ৩,৪০০ টাকা।
অপরদিকে খুলনা থেকে প্রতি রবি ও বৃহস্পতিবার কলকাতা ও খুলনার মধ্যে চলাচল করবে বন্ধন এক্সপ্রেস। কলকাতা থেকে সকাল ৭:১০ মিনিটে ছেড়ে আসবে এবং একই দিনই খুলনা থেকে দুপুর ১:৩০ এ কলকাতার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে। ট্রাভেল ট্যাক্স সহ এই ট্রেনের ভাড়া এসি চেয়ার ১,৫০০ এবং এসি সিট ২,০০০।
নতুন করে চালু হওয়া মিতালী এক্সপ্রেসও সপ্তাহে দুদিন চলবে। ঢাকা থেকে প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার রাত ৯:১৫ মিনিটে ছেড়ে যাবে নিউ জলপাইগুড়ির উদ্দেশ্যে। অপরদিকে নিউ জলপাইগুড়ি থেকে রাত ১১:৪৫ মিনিটে ছেড়ে আসবে প্রতি রবিবার ও বুধবার। এর ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে এসি চেয়ার ২,৭০৫ টাকা, এসি সিট ৩,৮০৫ টাকা এবং এসি বার্থ ৮,৯০৫ টাকা। ট্রাভেল ট্যাক্স ৫০০ টাকা এর মধ্যে অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।
বাইরোডে ভারত ভ্রমণ অনেকের কাছেই বিভীষিকার মতো। বিশেষত যারা পরিবার-পরিজন নিয়ে ভ্রমণ করেন তাদের জন্য সীমান্ত পার হওয়া বড় ধরণের একটি সমস্যা। সেজন্য অনেকেই কম বেছে নিতে চাইতেন ট্রেনকে। কিন্তু করোনার পর ট্রেন চালু না হওয়ায় অনেকেই স্থগিত রাখেন ভারত যাত্রা। এদিকে বাংলাদেশের পর্যটকদের জন্য জনপ্রিয় গন্তব্য দার্জিলিং-সিকিম যারা যাবে তাদের ভ্রমণ অনেকাংশে সহজ করে দিলো মিতালী এক্সপ্রেস।